ঝিনাইদহে ৮ দিনব্যাপি রাসলীলা উৎসব শুরু

 

ঝিনাইদহ অফিস: হাজারো ভক্ত আর দর্শনার্থীদের পদচারণায় ঝিনাইদহে শুরু হয়েছে ৮ দিনব্যাপি রাসলীলা উৎসব। শ্রী শ্রী কৃষ্ণের রাসলীলা উৎসব হলেও বলাই চাঁদ ঘোষ নামে এক সাধককে ঘিরে সদর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে এ রাসলীলা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে নলডাঙ্গা ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম নারায়ণপুর। ৮৪ বছর আগে এ গ্রামে কলেরা আক্রান্ত হয়ে ১৪৩ জন মানুষ মারা যায়। সে সময় এ গ্রামেই বলাই চাঁদ ঘোষ নামে এক সাধুর আর্বিভাব ঘটে। তিনি মানুষের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে দিতেন। পরে  অলৌকিকভাবে মানুষ কলেরাসহ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে থাকে তার কাছ থেকে। এরপর থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তিনি এখানে শ্রী শ্রী কৃষ্ণের রাসলীলা উৎসব পালন শুরু করেন।

প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ণাঢ্য আয়োজনে শুরু হয়েছে ৮ দিনব্যাপি উৎসব। এ উৎসবকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা আসেন তাদের মনোবাসনা পূরণ করার জন্য। গত মঙ্গলবার রাতে রাসলীলা উৎসবে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম। সভায় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুলকার নায়ন, সাংবাদিক শেখ সেলিম, ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি, পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা প্রফুল্ল কুমার সরকার, যোগেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, কেসি কলেজের শিক্ষার্থী অনামিকা বিশ্বাস প্রমুখ।

সন্ত্রাসপ্রবণ এলাকা হওয়ায় সভায় এলাকাবাসী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নিরাপত্তার জন্য একটি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট দাবি জানান। পরে এলাকার কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি দিবোদাস বিশ্বাস বলেন, ৮৪ বছর ধরে এ উৎসব পালিত হয়ে আসছে। রাসসীলাকে ঘিরে এলাকায় প্রতিবছর উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। শুধু দেশ নয়; দেশের বাইরে থেকেও অনেক ভক্ত আসেন এ উৎসবে। প্রায় ২ লাখ লোকের সমাগম হয় এ উৎসবকে ঘিরে।

স্থানীয় নলডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বলেন, রাসলীলা উৎসব প্রথম দিকে স্বল্প পরিসরে শুরু হলেও দিন দিন তা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাজার হাজার ভক্ত তাদের মনোবাসনা পূরণ করার জন্য এখানে আসছেন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব চলছে। তিনি আরও বলেন, মেলায় ৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাড়ি দিয়ে আসতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। তিনি দ্রুত এ রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি জানান। জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে।