জাপান-বাংলাদেশের সুসম্পর্ক দৃঢ় করবে কেনদো

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরে হয়ে গেলো জাপানী ঐতিহ্যবাহী খেলা কেনদো। শারীরিক কসরত ও প্রতিরক্ষামূলক এ খেলায় অংশ নেয় ২০ জন প্রতিযোগী। জাপানী খেলাটিকে বাংলাদেশে পরিচিত করতে ও জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কের সেতুবন্ধনকে আরো দৃঢ় করতে এ খেলাকে দেশব্যাপি ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন আয়োজকরা।

মারশাল আর্ট, সামুরাই, জুডোর মতো আর একটি আত্মরক্ষামূলক খেলা কেনদো। জাপানি সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রতোভাবে জড়িত এ খেলাটি। খেলাটিতে একদিকে যেমন রয়েছে শারীরিক কসরত, অপরদিকে রয়েছে শত্রুর মোকাবেলায় আত্মরক্ষামূলক নানা কৌশল। সম্প্রতি বাংলাদেশে খেলাটিকে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে কিছু জাপানী। এতে জাপান-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে মনে করেন আয়োজকরা। সেই লক্ষ্যে মেহেরপুরে ২০১৩ সালে শিশুদের নিয়ে তৈরি করা হয় ইন্টারন্যাশনাল কালচার এক্সচেঞ্জ কেনদো ক্লাব। বর্তমানে এ ক্লাবের সদস্য সংখ্যা ২০ জন। গতকাল শুক্রবার সকালে তাদের নিয়ে মেহেরপুর সরকারি কলেজ মাঠে হয়ে গেল কেনদো প্রতিযোগিতা। নতুন এ খেলাটিকে উপভোগ করছেন দর্শক ও খেলোয়াড়রা। পর্যায়ক্রমে দেশের আরও জেলায় খেলাটি ছড়িয়ে দেয়া হবে বলে জানালেন জাপানীরা। ফুটবল ও ক্রিকেটের পাশাপাশি এ খেলাটি দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। কারণ খেলাটিতে আত্মরক্ষামূলক বিভিন্ন কৌশল রয়েছে। আর এটি দেখে শিশুরাও মুগ্ধ হয়ে প্রশিক্ষণ নিতে ছুটে আসছে ক্লাবটিতে। খেলায় অংশ নিয়ে খুশি খেলোয়াড়রা। দুটি বাঁশের তৈরি লাঠি নিয়ে খেলতে নামেন দুজন খেলোয়াড়। মাথায় হেলমেট, আত্মরক্ষার জন্য বুকে শক্ত করে বাঁধা একটি প্লাস্টিক তৈরি প্যাড আর হাতে গ্লাপস। মাঠে নেমে একে অন্যকে আঘাত করতে থাকে। বুক ও হাতের ডানদিকে ও মাথায় আঘাত করতে পারলে পাবে একটি করে পয়েন্ট। নির্ধারিত সময়ে যার পয়েন্ট বেশি হবে সে বিজয়ী হবে।

৭ম শ্রেণিতে পড়া খেলোয়াড় রাকিব হাসান জানান, এক বছর আগে একটি লিফলেটের মাধ্যমে কেনদো গেমস সম্পর্কে জানতে পারে সে। এরপর স্কুল ফাঁকি দিয়ে মুজিবনগরে দেখতে যায় খেলা। খেলার নানা শারীরিক কসরত দেখে মুগ্ধ হয় সে। এরপর বাবা-মার অনুমতি নিয়ে ভর্তি হয় ইন্টারন্যাশনাল কালচার এক্সচেঞ্জ কেনদো ক্লাবে। এক বছর প্রশিক্ষণের পর সে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করে খুশি সে।

জাপানি নারী খেলোয়াড় মামিকো ফুজমিরো জানান, পৃথিবীতে নারী-পুরুষ সবাই সমান। অথচ নারীরা সবসময় নির্যাতনের শিকার হয়। প্রতিবাদ করার ভাষা থাকে না। কোনো নারী কেনদো গেমসের প্রশিক্ষণ নিলে বিভিন্ন সময়ে নারীরা বিপদ-আপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে। এছাড়াও খেলাটির মাধ্যমে শারীরিক কসরত শেখা যাবে। নিজেকে শক্তিশালী নারী হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।