চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজের প্রভাষক শামীমা সুলতানার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

 

যশোর বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও জেলা শিক্ষক-অভিভাবক ফোরামের কাছে তদন্তের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে বিরূপ প্রভাব পড়ায় ব্যাপক অলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। অভিযোগের তীর পৌর কলেজের পদার্থ বিদ্যা বিভাগের প্রভাষক শামীমা সুলতানার দিকে। প্রভাষক শামীমা সুলতানার কারণেই ফলাফলে বিপর্যয় ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে অভিভাবক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। প্রভাষক শামীমার  বিরুদ্ধে যশোর বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও জেলা শিক্ষক-অভিভাবক ফোরামের কাছে তদন্ত দাবি করেছে অভিভাবক সমাজ। বিগত তিন বছরে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে যশোর বোর্ডে টপ টেনের ভেতরে থাকলেও এবার প্রভাষক শামীমা সুলতানার কারণে হয়নি বলে অভিযোগ করেছে অভিভাবকরা-শিক্ষকরা।

চুয়াডাঙ্গার সর্বশেষ মহকুমা প্রশাসক মোহাম্মদ ফিরোজের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৮৩ সালে চুয়াডাঙ্গা পৌর পরিষদের নিজস্ব প্রায় এক একর জমির ওপর পৌর কলেজেটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কলেজেটি প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অ্যাডভোকেট আবুল কাসেম। কলেজটি অনেক চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে এলেও দু একজন শিক্ষকের কারণে কলেজটি গুণমত মানে পৌঁছাতে পারেনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মেলেনি স্নাতক পর্যায়ের। এ কলেজে দুই হাজার থেকে দুই হাজার বার সাল পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগে ২ থেকে ৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে প্রতি বছরে পাস করে  মাত্র ২ জন। আবার কোন কোন বছরে একজন শিক্ষার্থীও পাশ করেনি। শুধুমাত্র এ কলেজে ১৯৮৪-৮৫ শিক্ষাবর্ষে ৫০ জন শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছিলো। এছাড়া বিজ্ঞান বিভাগে ৪ জন শিক্ষক থাকলেও প্রদর্শক রয়েছেন মাত্র ১ জন। অথচ ৩৫০ জন সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়ার সক্ষমতা না থাকা সত্বেও পরীক্ষার অয়োজন করা হয়েছে। আর এই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে প্রভাষক শামীমা সুলতানা ও কলেজের কয়েকজন শিক্ষক।

যশোর বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী ১৬ শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন কক্ষ পরিদর্শক থাকার কথা। অথচ ওই কলেজে এমপিওভুক্ত শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ১৩ জন। এদের মধ্যে ৫ জন থাকে পরীক্ষা পরিচালনা কমিটিতে। অবশিষ্ট ৮ জন শিক্ষকসহ বেসরকারি ননএমপিও শিক্ষক ধার করে নিয়ে এসে কক্ষ পরিদর্শক বানানো হয়। এ কারণে পরীক্ষার হলে স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হয় এবং সরকারি কলেজের পরীক্ষার্থীরা নানা ধরণের হয়রানির শিকার হয়। প্রভাষক শামীমা সুলতানা পরীক্ষার হলে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালনের সময় ধারাবাহিকভাবে পরীক্ষার্থীদের মানসিক নির্যাতন ও খাতা কেড়ে নিতেন। অথচ, তিনি কলেজে যোগদান করেছেন অনিয়মতান্ত্রিকভাবে। তিনি কলেজের নিয়োগ পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন এবং যোগদান না করেই ৯ মাসের সরকারি বেতন উত্তোলন করেন। যে কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিট টিম তার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তে নেমেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া কেউ কেউ অভিযোগ করেছে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষায় টাকা নিয়ে নাম্বার বেশি দেয়ার অভিযোগও শোনা গেছে।

প্রভাষক শামীমা সুলতানা ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার ততকালীন জাসদ গণবাহিনীর প্রধান গোলাম মোস্তফার ভাতিজী। চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজে যোগদানের আগে তিনি ঢাকা মিরপুর বাংলা কলেজে অতিথি শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। চুয়াডাঙ্গার অভিভাবক সমাজ প্রভাষক শামীমা সুলতানার বিষয়ে তদন্তের দাবি করেছে যশোর বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও জেলা অভিভাবক-শিক্ষক ফোরামের কাছে।