গাংনীর হিজলবাড়িয়ায় গৃহবধূর আত্মহত্যা নিয়ে দুই পরিবারের ভিন্ন মত : মরদেহ ময়নাতদন্তে

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া গ্রামের গৃহবধূ ঝর্না আক্তার (২২) গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। স্বামীর পরিবার এ দাবি করলেও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলেছেন পিতার পরিবার। তবে মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করতে মরদেহ ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। ঝর্না আক্তার হিজলবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর বিপুল হোসেনের স্ত্রী ও পার্শ্ববর্তী সাহারবাটি গ্রামের হামদু মিয়ার মেয়ে।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বামীর বসত ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ঝর্না খাতুন। প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই গা ঢাকা দেয় স্বামী বিপুল ও তার ছোট ভাই। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধূর শ্বশুর ইকরামুল ও শাশুড়ি রুপিয়া খাতুনকে আটক করে পুলিশ। এদিকে খবর পেয়ে ঝর্না খাতুনের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে যান। হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ তোলেন। মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেয়।

ঝর্নাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কয়েকনজ নারী বলেন, ঘটনার সময় বিপুলের পিতা বাড়ির পাশে গরুর খাবার তৈরী করছিলেন। মা ছিলেন কাথুলী গ্রামে। সকালে বিপুল ও তার স্ত্রীর মধ্যে মৃদু ঝগড়া হয়েছিলো। বিপুল কাজে চলে যায়। প্রতিবেশীরা ঘরের বেড়া ভেঙে ঝর্নাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। হত্যাকাণ্ডের মতো কোনো ঘটনা ঘটতে পারে বলে মানতে নারাজ প্রতিবেশী ও গ্রামের অনেকেই। আড়াই বছর আগে তাদের বিয়ে হলেও দাম্পত্য জীবনে কিছুটা কলহ ছিলো। গ্রামের জিনারুল নামের দুই সন্তানের জনকের হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ঝর্না। সাহারবাটি গ্রামে সালিসে জিনারুলের মোটা অঙ্কের জরিমানার মধ্যদিয়ে নিষ্পত্তি হয়। বিপুল পরে স্ত্রীকে আবারো ঘরে তুলে নেন। বিপুল ও তার পরিবারের লোকজন সাদাসিধে ধরনের হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে তারা আপত্তি করেনি। পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কিছুটা দ্বন্দ্ব থাকতে পারে বলে ধারণা প্রতিবেশীদের।

এদিকে ঝর্নার পিতার পরিবারের দাবি, তার থুতনিতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিপুল ও তার পরিবারের লোকজন হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। তবে এ বিষয়ে থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ দেননি ঝর্নার পরিবার।

গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কোনো চিহ্ন পায়নি পুলিশ। তারপরেও বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ থাকায় ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা রুজু করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর বিপুলের পিতা-মাতাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

দামুড়হুদা পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড ক