গাংনীতে স্কুলছাত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে ফেরত দিলো যুবক

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী শহরের এক স্কুল পড়ুয়া কিশোরীকে প্রেমের প্রলোভনে ভাগিয়ে নেয়ার ঘটনায় তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। একসাথে থাকার পর কিশোরীকে পরিবারের কাছে ফেরত দেয়া হয়েছে। আইনি ঝামেলা থেকে বাঁচতে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করেছে ওবাইদুল্লাহ। বিষয়টি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে দণ্ডনীয় হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছে অভিযুক্ত ওবাইদুল্লাহ। ওবাইদুল্লাহ গাংনী পৌরসভাধীন বাঁশবাড়িয়া গ্রামের তামাক বাইনের শ্রমিক সর্দ্দার গিয়াস উদ্দীনের ছেলে।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, গাংনী বাজারপাড়ার জনৈক এক স্কুলছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওবাইদুল্লাহ। কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে ওবাদুল্লাহর বন্ধু বাঁশবাড়িয়া গ্রামের শিহাব হোসেন মোটরসাইকেলেযোগে তাদেরকে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। বিষয়টি নিয়ে ছাত্রীর উদ্বিগ্ন পরিবার খোঁজ নেয়া শুরু করে। পরে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামসুদ্দীন আহম্মেদসহ গাংনী বাজারপাড়ার কতিপয় লোকের মধ্যস্থতায় ছাত্রীকে পরিবারে ফেরত দেয় ওবাইদুল্লাহ। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে কিছু লোককে ১৮ হাজার টাকা দেয় ওবাইদুল্লাহ। আইনি ব্যবস্থা নেবে না বলে ছাত্রীর পরিবারের কাছ থেকে লিখিত মুচলেকাও নেয়া হয়। তবে কিশোরী ছাত্রীর ভবিষ্যতের কথা ভেবে মুখ বন্ধ করেছে তার পরিবার। লোকলজ্জার ভয়ে তারা মামলা করেনি বলে পরিবারসূত্রে জানা গেছে।

জানতে চাইলে সাবেক কাউন্সিল সামসুদ্দীন আহম্মেদ বলেন, আমি কিছু জানি না। গিয়াস উদ্দীনের পরিবারের ডাকে গিয়েছিলাম। বিষয়টি তো মীমাংসা করা হয়েছে। এখন কেন এ নিয়ে কথা হচ্ছে? নারী নির্যাতন দমন আইনে দণ্ডনীয় অপরাধের ঘটনা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা কিভাবে করলেন এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান তিনি।

এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে ওবাইদুল্লাহ ও তার বন্ধু শিহাব। তাহলে অন্য মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়? এমন প্রশ্ন অনেক অভিভাবকের।

তবে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে জানালেন গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোনো ব্যক্তির মতামতের কোনো গুরুত্ব নেই আইনে। তাকে ফুঁসলিয়ে ভাগিয়ে নিয়ে ওবাইদুল্লাহ ও তার সঙ্গীরা অপরাধ করেছে। নারী নির্যাতন আইনে বিষয়টি হচ্ছে অপহরণ ও ধর্ষণের অপরাধ। ওবাইদুল্লাহ ও তার বন্ধু এবং মীমাংসাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।