গাংনীতে ঈদের কেনাকাটায় গত বছরের চেয়ে ভিন্নতা : তরুণদের পছন্দ লম্বা পাঞ্জাবি আর ফতুয়া

 

মাজেদুল হক মানিক: বছর দুয়েক আগেও তরুণরা শর্ট পাঞ্জাবি ব্যবহার করলেও ইদানিং লম্বা ঝুলের পাঞ্জাবির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তাছাড়াও পছন্দের তালিকায় রয়েছে ফতুয়া। বিশেষ ধরণের  কারুকাজ খচিত নকসাঁ রূপাঞ্জাবী তরুণদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। মেহেরপুর গাংনীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে চমকপ্রদ কারুকাজ খচিত নকঁসার লম্বা ঝুলের পাঞ্জাবি ঝোলানো।

ঈদ ঘনিয়ে এলে বিক্রি আরো বাড়বে এমন চিন্তাভাবনা থেকে বাড়তি চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্যবসায়ীরাও নানা রং আর ডিজাইনের পাঞ্জাবি আমদানি করেছেন। সুইয়ের ফোঁড়ে লুকিয়ে থাকা সুন্দর কারুকাজের পাঞ্জাবি আর শাদামাটা নকশার পাঞ্জাবি ক্রেতারা কিনছেন পছন্দমতো। আর ঈদ হচ্ছে বর্ষাকালে তাই পাঞ্জাবির রঙে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে সবুজ, নীল, বেগুনি, গোলাপি, শাদা, হলুদ, অফহোয়াইটসহ নানা রঙ। শর্ট পাঞ্জাবিও বিক্রি হচ্ছে, তবে তা তুলনামূলক কম। আবার একটু রুচিশীল ক্রেতারা ভিন্ন কারুকাজ খচিত ফতুয়া কেনার দিকেই ঝুঁকছেন। দামও সাধ এবং সাধ্যের নাগালে। বিভিন্ন দোকানে ফতুয়া পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় মধ্যে।

গাংনীর এসএম প্লাজা, আমিরুল মার্কেট, স্মরণিকা ও বামন্দী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গলা, পাঞ্জাবির কলার, হাতা বা বুকের সামনে আছে নানা ধরনের নকশা। লম্বা পাঞ্জাবিতে কলার ও বুকের দিকে থাকছে পুঁতি বা সুতার কাজ। আছে লম্বা, সেমিলম্বা, শর্ট, ঢিলেঢালা ও আঁটসাঁট পাঞ্জাবি। অন্যদিকে কাপড়ে কাজ করা, পেন্টন স্টাইল, মোটিফ ডিজাইন, মিনার মোটিফ এরকম নানা নকশাও যুক্ত হয়েছে। কাটছাঁট রঙ আর বৈচিত্র এসব পাঞ্জাবিতে আছে নতুনত্বের ছোঁয়া। জুড়ে দেয়া আছে বাড়তি পকেট।

কারচুপি বা জারদৌসি কাজের পাঞ্জাবির দেখা মিলছে বিভিন্ন দোকানে। বিভিন্ন দোকানে কথা বলে জানা যায়, তরুণরা পছন্দ করছেন টিউনফিট পাঞ্জাবি। লম্বা বা খাটো দুই ধরনের টিউনফিট পাঞ্জাবি আছে বাজারে। কোনো পাঞ্জাবিতে আবার ব্যবহার করা হয়েছে থ্রিকোয়ার্টার হাতা। কোনোটা বোতাম আবার কোনোটা বোতাম ছাড়া। তবে কারুকাজ খচিত পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে বোতাম ছাড়া ঢিলা হাতা পছন্দ তরুণদের।

এবার ঈদের পাঞ্জাবির কাপড়ের মধ্যে রয়েছে রাজশাহী সিল্ক, মটকা, সুতি, আদি, মহিশুর সিল্ক, অ্যান্ডি সিল্ক, তসর, শাহজাদা আদি, অ্যান্ডি কটন, ইন্ডিয়ান সিল্ক, জাপানি ইউনিটিকা, তসর, ইন্ডিয়ান চিকেন, সামু সিল্ক, ধুতিয়ান ও জয়শ্রী সিল্ক। বিক্রেতারা জানান, কারুকাজের পাঞ্জাবির এবারও চাহিদা আছে। ক্যাটালগসহ বিভিন্ন নকশা দেখিয়ে অর্ডার দিয়ে এসব কারুকাজ করিয়ে আনেন। নকশা শেষে ৩ থেকে ৪শ টাকার পাঞ্জাবি হয়ে যায় তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা দামের।

এর পাশাপাশি রয়েছে পাকিস্তানি কাবুলি সেট। এর দাম পড়বে দেড় হাজার থেকে ২ হাজার ৫শ টাকা। এছাড়া বুটিক হাউসগুলোতেও আছে পাঞ্জাবির সম্ভার। শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের বিভিন্ন হাউসে আছে নানা নকশার লম্বা ও খাটো পাঞ্জাবি। সেখানকার নিত্য উপহার, তারামার্কা, স্বপ্নবাজ, মেঠোপথ, লাল-শাদা-নীল, দেশাল, ইহ এবং সুই-সুতাসহ অন্যান্য হাউসে ৮শ থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে।

কয়েকজন ক্রেতা জানান, নতুন পাঞ্জাবি ছাড়া যেন ঈদের আনন্দ অপূর্ণ থেকে যায়। বিশেষ কিছু বয়সী ছেলেরাই মূলত এমন আবদার করে থাকে পরিবারের কাছে। পরিবারের পক্ষ থেকেও সাধ্যমতো এই অনুষজ্ঞটি কিনে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারে দর কিছুটা বৃদ্ধি থাকায় হতাশা বিরাজ করছে বেকার ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্যদের মাঝে। সেক্ষেত্রে বাজার মনিটরিং এর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। আকাশচুম্বী দর নিয়ে ক্রেতাদের ঠকানো হচ্ছে কি-না তা দেখার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন ভুক্তভোগী কয়েকজন ক্রেতা।