গণধর্ষণে লঘুদণ্ড, ভারতজুড়ে তীব্র অসন্তোষ

 

মাথাভাঙ্গা অনলাইন: ভারতের চাঞ্চল্যকর দিল্লি গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত একমাত্র কিশোরের লঘু শাস্তিতে দেশটিতে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

ভারতের গণমাধ্যম ও রাজনীতিবিদরা রোববার কিশোর অপরাধীদের জন্য আরো কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। গত ডিসেম্বরের ওই গণধর্ষণের দায়ে শনিবার ১৭ বছরের এক কিশোরকে তিন বছরের শাস্তি দেয়ার পর এ দাবি তোলা হলো।

রোববার ভারতীয় ট্যাবলয়েড মেইল টুডে শীর্ষ খবরের শিরোনামে লিখেছে, “১৬ ডিসেম্বরের ধর্ষণকারী খুন করার অপরাধ থেকেও মুক্তি পেল।” অপরাধী কিশোরকে এখন থেকে আর মাত্র ২৮ মাস কিশোর সংশোধনাগারে কাটাতে হবে। বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে গত আট মাস সে কারাগারে বন্দি ছিল।

হিন্দুস্তান টাইমস এ রায়ের সমালোচনা করে লিখেছে, এই অপরাধী এখন সংশোধনাগারে টিভি দেখতে এবং খেলাধুলা করতে পারবে। অথচ পুলিশ সূত্র এর আগে বলেছিল, যে ছয় ব্যক্তি প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীর ওপর বলাতকার চালিয়েছে তাদের মধ্যে এই কিশোর ছিল সবচেয়ে হিংস্র।

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রথম পাতায় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে আরো বলা হয়েছে, যখন কেউ একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে তখন যদি সে নিছক ‘কিশোর’ বলে লঘু শাস্তি নিয়ে পার পেয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে আইনের কোথাও না কোথাও সমস্যা আছে। এতে আরো বলা হয়েছে, আইনটি সংশোধন করে অবশ্যই কিশোরদের বয়সসীমা কমানো উচিত।

ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে বিরোধীদলীয় নেতা সুশমা স্বরাজ এক টুইটবার্তায় জানিয়েছেন, তিনি আগামী শুক্রবারই লোকসভায় কিশোর আইন সংশোধন চেয়ে একটি বিল উত্থাপন করবেন। তিনি বলেন, এই হিংস্র কিশোরের তিন বছরের শাস্তি কোনোভাবেই ন্যায়বিচার হতে পারে না।

পাশবিকতার শিকার নিহত মেয়ের পরিবার বলেছে, তারা অপরাধী কিশোরের কঠোর শাস্তির দাবিতে উচ্চ আদালতে লড়বেন। রাজনীতিবিদ সুব্রামানিয়ান স্বামী এরইমধ্যে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে শনিবারের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। তিনি ভারতীয় দণ্ডবিধির এ সংক্রান্ত প্রচলিত আইন চ্যালেঞ্জ করে ওই আপিল করেন।

গত বছর ১৬ ডিসেম্বর মধ্যরাতের গণধর্ষণের ঘটনার সময় অভিযুক্ত কিশোরের বয়স ছিল ১৭ এবং তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর শনিবার তাকে তিন বছর কিশোর সংশোধনাগারে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। ভারতীয় আইনে কিশোর বয়সের জন্য এটি সর্বোচ্চ শাস্তি।

একই অপরাধের দায়ে আটক অপর চার প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে অভিযুক্ত কিশোরও তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

দিল্লি গণধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত বাকি চার ব্যক্তির ফাঁসি হতে পারে। অভিযুক্ত পঞ্চম প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি গত মার্চে কারাগারে মারা যান। কারা কর্তৃপক্ষ দাবি করে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।