কর্নেল আজাদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা অনুদান

 

স্টাফ রিপোর্টার: সিলেটের আতিয়া ভিলায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত র‍্যাবের গোয়েন্দা পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকার আর্থিক অনুদান দিয়েছেন পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক। গতকাল শুক্রবার সকালে আবুল কালাম আজাদের ঢাকার বাসায় তার স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানার হাতে অনুদানের অর্থ তুলে দেন আইজিপি। এ সময় ডিজি র‍্যাব বেনজির আহমেদ, অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, এআইজি (কনফিডেনশিয়াল) মো. মনিরুজ্জামান, এআইজি (ওয়েলফেয়ার) মো. আবদুল্লাহ হেল বাকী, এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) সহেলী ফেরদৌস এবং কর্নেল আজাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ মার্চ সিলেটের শিববাড়ির আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে অংশ নেন লে. কর্নেল আজাদ। শেষ বিকালের দিকে একটি পরিত্যক্ত বোমা বিস্ফোরণে তিনি গুরুতর আহত হন। গুরুতর অবস্থায় রাতে হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকা সিএমএইচে আনা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৬ মার্চ রাত ৮টায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। এরপর তাকে ঢাকার সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

আবুল কালাম আজাদের পৈতৃক বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার মনাকসা ইউনিয়নের সহাপাড়া গ্রামে। তার শ্বশুরবাড়িও একই এলাকায়। শিবগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত ডা. মইন উদ্দিন আহাম্মেদ মন্টুর ছোট মেয়ের সাথে আজাদের বিয়ে হয়। বাবা রেজাউল করিমের সরকারি চাকরির সুবাদে ঢাকাতেই বড় হয়েছেন আবুল কালাম আজাদ ও তার ছোট ভাই ইউসুফ হিমেল। বাবা মারা যাওয়ার পর মা সায়েদা খানমকে নিজের কাছেই রেখেছিলেন তিনি। কর্নেল আজাদের বড় ছেলে জারিফ ঢাকা ক্যান্টমেন্টে অবস্থিত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের (বিআইএস) ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। মেয়ে জারার বয়স আট বছর। সে একই স্কুলে পড়ছে ক্লাস ওয়ানে। এছাড়া আরেক ছেলে জাবিরের বয়স এখন মাত্র ২ বছর ৩ মাস। ৩৪তম বিএমএ লং কোর্সের মাধ্যমে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি ৬ বেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণ শেষ করেন। এরপর ২০০৫ সালে উচ্চতর প্যারাট্রু–পার প্রশিক্ষণ নিয়ে সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডো হিসেবে নাম লেখান আজাদ।

২০১১ সালে মেজর পদমর্যাদার কর্মকর্তা হিসেবে প্রথম কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনী র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাবে পোস্টিং পান। তিনি ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে উপঅধিনায়ক ও অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের অক্টোবরে পান গোয়েন্দা শাখার প্রধানের দায়িত্ব। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন বিশেষ করে জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ ও হিজবুত তাহরিরের সদস্যদের গ্রেফতারে লে. কর্নেল আজাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। জঙ্গিবাদ এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য তিনি বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম) পুরস্কারে ভূষিত হন।