একুশের চেতনা বুকে ধারণ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে আসি সকলে

দর্শনা অফিস: প্রতিবছরের মতো এ বছরো একুশের মেলার আয়োজন করেছে অনির্বাণ থিয়েটার। ‘একুশ আমার জয়, আধার করিনা ভয়’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে বুকে ধারণ করে অনির্বাণ থিয়েটারের একুশে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় কলেজমাঠে জাতীয় সঙ্গীত ও মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জলনের মধ্যদিয়ে ঢাকের তালে তালে মেলার উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মঞ্জু। উদ্বোধনী আলোচনায় প্রধান অতিথি মাহফুজুর রহমান মঞ্জু বলেন, ইতিহাসের যুগ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে মহান একুশের চেতনায় উদ্বুব্ধ হয়ে মানবতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। একুশের ইতিহাস রক্ত আর সন্তান হারা দুঃখিনী মায়ের অশ্রুদিয়ে লেখা ইতিহাস। ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনে যাদের রক্তে লাল হয়েছিলো বাংলার মাটি, আমরা তাদের ভুলবোনা কোনোদিন। রাজপথের সেই রক্তের দাগ হয়তো মুছে গেছে, কিন্তু যতোদিন থাকবে এ পৃথিবী বিদ্যমান, ততোদিন বাঙালি জাতির অন্তর থেকে মুছবেনা সে শোকের ক্ষত। অনির্বাণ থিয়েটারের সভাপতি ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দর্শনা পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, যে ভাষার জন্য এতো ত্যাগ, সেই মায়ের ভাষা আজ বিকৃত হচ্ছে নানাভাবে। তাই আসুন একুশের মহিমায় মহিম্মান্নিত হয়ে বাংলা ভাষার মহত্মকে অক্ষুণ্ণ রাখি। ভাষার প্রতি সকলে হই দরদি, নিংড়ে দিয়ে সবটুকু ভালোবাসা, মায়ের মুখের হাসি রাখি অটুট। অনির্বাণ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক নাট্যকার আনোয়ার হোসেন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, একুশ শোকের চাঁদরে মোড়ানো একটি ঐতিহাসিক দিন। ১৯৫২ সালে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে যারা অর্জন করেছিলো আজকের এ মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আমরা তাদের ভুলিনি ও ভুলবোনা কখনো। আমরা চাই, একুশের চেতনায় আগামী প্রজন্ম রুখে দাড়াক সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। আলোচনা পর্ব শুরুর আগে অতিথিরা মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। সকালে বর্ণ লিখন ও বিকেলে শিশুদের মধ্যে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় অতিথির হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছেন প্রতিযোগীরা। মাহবুবুর রহমান মুকুল ও মিল্টন সাহার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- ইউপি চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম, আলী মুনসুর বাবু, সিরাজুল ইসলাম, আতিয়ার রহমান হাবু, ইদ্রিস আলী প্রমুখ। আলোচনা পর্বের পরপরই মঞ্চে ওঠেন দেশবরণ্য লোকশিল্পী কুদ্দুস বয়াতী। প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী গান গেয়ে দর্শক মাতিয়ে তোলেন এ লোকশিল্পী। এবারের মেলায় প্রতিবারের মতো বিনোদনের জন্য রয়েছে নাটক, গান, আবৃত্তিসহ নানা আয়োজন। তাছাড়া রয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নাগরদোলাসহ নানা ধরণের স্টল। এবারের মেলায় প্রতি বছরের মতো স্টল করেছে গণউন্নয়ন গ্রন্থাগার।