উত্তপ্ত রাজনীতি : শিল্পীদের ভাবনা

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল

সময় তো ঘনিয়ে আসছে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতেই হবে। আমি বিশ্বাস করি আমাদের দেশের বড় দু দলও চায় না কোনো রকম সংঘাত হোক। সংঘাত হলে কী লাভ? আরেকটি ওয়ান ইলেভেন নিশ্চয়ই কারোই চাওয়া নয়। বিরোধীদল সমাবেশ করবে। সরকার আবার সভা-সমাবেশ বন্ধ করেছে। যার যার কথা বলার, স্বাধীনভাবে চলার অধিকার আছে। আবার নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড রোধ করতে কর্তৃপক্ষও নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে। এ নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা নিয়ে ভাবনায় দুশ্চিন্তায় আমরা কেউই থাকতে চাই না। আমি বলবো আলোচনা আলোচনা এবং আলোচনা-ই পারে বর্তমান পরিস্থিতির একটা সুন্দর সমাধান দিতে। দু নেত্রী দেশের শান্তির জন্য কোনো পদক্ষেপ নিলে সেটা নিশ্চয় আগামীর আদর্শ হয়ে থাকবে।

ফেরদৌস ওয়াহিদ

দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আর সবার মতো আমিও উৎকণ্ঠায় আছি। আসলে কী হতে যাচ্ছে? উৎকণ্ঠা ব্যাপারটা যুদ্ধের চেয়েও ভয়ঙ্কর। যুদ্ধে পক্ষে হোক বিপক্ষে হোক পরিষ্কার একটা পূর্বানুমান করা যায়। কিন্তু উৎকণ্ঠার মধ্যে জানার উপায় নেই আসলে কতোটা ভালো বা কতোটা ভয়ঙ্কর কিছু হতে যাচ্ছে। এমনিতে গানের মানুষ হিসেবেই চাই দেশের পরিস্থিতি ভালো থাকুক, অর্থনীতি ভালো থাকুক। তাতে আমাদের পেশাগত লাভ।  আর বড় কথা নিজের স্বার্থেই শুধু নয়, দেশের স্বার্থেই একটা স্থিতিশীল পরিবেশ চাই। যদিও যা কিছু হচ্ছে তার কোনো শেষ দেখছি না।

ফকির আলমগীর

প্রথমত, সব দলের অংশগ্রহণে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ একটা নির্বাচিন চাই। দ্বিতীয়ত, দু নেত্রী যেন জনগণকে না ভুগিয়ে একটা সুন্দর সমঝোতায় আসেন। তবে একটা কথা বেশ জোর দিয়ে বলতে চাই- নির্বাচনই বড় কথা নয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী এমন কিছু যেন আগামীতে না ঘটে সে প্রত্যাশা করি। জঙ্গিবাদ দমন, যুদ্ধাপরাধের বিচারে যেন আমাদের প্রত্যয় অটুট থাকে। আমাদের দেশে তো এখন আদর্শিক রাজনীতি নাই। আগে দলে দলে লড়াই হতো, এখন ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে লড়াই হচ্ছে। তবে আশার কথা সমঝোতার দিকে এগোচ্ছে দু দল। আমি আশাবাদী দু নেত্রী সুন্দর একট সমাধানে আসবেন। কারণ সমাধান না হওয়া মানেই তৃতীয় শক্তির উত্থান। যেটা ভালো করে জানেন দুই নেত্রী-ই।

আবুল হায়াত

সাধারণ জনগণের মতো আমরাও শান্তি চাই। দেশে গণতন্ত্র, স্বৈরাতন্ত্র যে তন্ত্রই আসুক না কেন সেটা যেন দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে হয়। সাধারণ জনগণকে বিপদে না ফেলে বর্তমান প্রধান দু নেত্রী যেন দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত নেন এ প্রত্যাশা করেই  আমরা তাদের দিকে চেয়ে আছি।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

প্রতিবার সরকার বদলের সময় একই নাটক আমরা দেখতে চাই না। সবাই বলে আলোচনায়  আসতে হবে। এ  আলোচনা পাঁচ বছর পরে কেন? দু দলের মধ্যে প্রতি মাসে একবার করে আলোচনা হওয়া দরকার। আর দেশের বর্তমান পরিস্থতির জন্য সবার আগে পরাজয়ের মূল্য কমানো প্রয়োজন। আর এ পরাজয়ের মূল্য কমাতে হলে দেশের আইন আদালত এবং বিচার ব্যবস্থাকে স্বাধীন করে দিতে হবে। আর দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে আমরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতির  সমাধান চাই।

চঞ্চল চৌধুরী

বর্তমান সঙ্কট থেকে আমরা আশুমুক্তি চাই। তবে ধর্ম নিয়ে যেকোনো রাজনীতি আমি অপছন্দ করি। আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতারা উদ্দেশ্য নিয়ে ক্ষমতায় আসেন। দেশকে ভালোবেসে নয়। দেশটা আমাদের সবার। তাই আমার মতে এদেশকে ভালোবেসে শুধু আলোচনা নয় অবশ্যই পজেটিভ মানসিকতা নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদেরকে সমঝোতার সিদ্ধান্তে আসতে হবে। সমঝোতা হলেই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব।
রোকেয়া প্রাচী

আমার খুব সাধারণ কথা। কোনো কিছুতেই কোনো সংঘাত নয়। নির্বাচন নয় দেশকে সামনে রেখে দু দলকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দল খানিকটা সমোঝতার প্রস্তাব দিলেও বিরোধী দল সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। তার মানে তাদের মধ্যে দেশ প্রেম নেই। তাই বিরোধী দলকে সবদিক বিবেচনা করে একটু ছাড় দিয়ে খুব দ্রুতই একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে। আর এই সঙ্কটময় সময়ে দু দলই নমনীয় হয়ে সমঝোতায় এসে দেশের মানুষকে একটি সুন্দর ও স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দেবেন এটা আমাদের কাম্য।

নাজনীন হাসান চুমকী

আমি মনে করি দেশ ও জনগণের কথা মাথায় রেখে দুটি প্রধান দলের নেতাদের একমতে পৌঁছানো দরকার এবং একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আমরা চাই। দলের চেয়ে দেশ আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ কথা সবার মাথায় রাখা দরকার।

মাহফুজ আহমেদ

রাজনৈতিক দলের নেতারা আসলেও কি আমাদের নিয়ে ভাবেন নাকি তারা নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত? একদল ভাবেন তারা কীভাবে ক্ষমতায় থাকবেন অন্যদল ভাবেন তারা কীভাবে ক্ষমতায় আসবেন। এ ক্ষমতার লড়াই বন্ধ করতো হবে। দেশের ১৬ কোটি মানুষের মতো আমারও দম বন্ধ হয়ে আছে। আমরা ঠিকমত দম নিতে পারছি না। এ দম বন্ধ করা পরিস্থিতি থেকে আমরা মুক্তি চাই।

চয়নিকা চৌধুরী

দেশে একটা অস্থির অবস্থা চলছে। শুধু রাজনৈতিক পরিস্থিতি নয় আমরা যখনই যে কাজই করছি প্রতিটি কাজের জায়গাতেই কেমন যেন একটা অস্থিরতা! আমরা শান্তি প্রিয় মানুষ। আমরা এ সুন্দর দেশে শান্তি চাই।

কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি

২১ অক্টোবর বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য নতুন একটি প্রস্তাব দেন। এ নিয়ে কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিএনপির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে একটি পোষ্ট দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড়। ন্যান্সি বলেছেন, হ্যাঁ; আমি যা বিশ্বাস করি তাই বলেছি। দেশের অধিকাংশ মানুষই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। প্রধানমন্ত্রী সেটা মানবেন না। নিজের পছন্দ মতো একটা নির্বাচন দিতে চাইছেন।