আলমডাঙ্গা রূপালী ব্যাংকে ঘাপটি মেরে থাকা জালিয়াতচক্র আবারও সক্রিয়

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: রূপালী ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখায় ঘাপটি মেরে থাকা জালিয়াতচক্র আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গতকাল সোমবার সাজিবার রহমান নামের এক গ্রাহক ২০ হাজার টাকা তুলতে গেলে কৌশলে তার চেকের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বিকেলে অনেক দেনদরবার শেষে সন্ধ্যায় গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। ইতঃপূর্বে রূপালী ব্যাংকের ওই শাখার টোকেন প্রদানকারী অস্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত রতন জালিয়াতি করে গ্রাহকদের প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পালিয়েছে। সে সময় বেরিয়ে আসে অস্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত টোকেন প্রদানকারী পিয়ন রতনের ব্যাংকে বসে রমরমা হুন্ডিবাণিজ্যের কাহিনি।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের মৃত লালচাঁদ মালিতার ছেলে সাজিবার রহমান গতকাল সোমবার দুপুরে রূপালী ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখায় যান তার ভাগ্নি হুসনে আরার ২০ হাজার টাকার চেক ভাঙিয়ে টাকা তুলে নিয়ে যেতে। তিনি বেলা ১১টার দিকে যান ব্যাংক কর্মকর্তা শাহিদুর রহমান রাজুর নিকট। তিনি তখন  কম্পিউটারে কাজ করছিলেন। চেক হাতে নিয়ে শাহিদুর রহমান রাজু চেকের উল্টো দিকে সাজিবার রহমানের একাধিক স্বাক্ষর নেন। এরপর তিনি কম্পিউটারে চেক পরীক্ষা করে  সাজিবার রহমানকে বসে অপেক্ষা করতে বলেন। সাজিবার রহমান চেকের বিপরীতে টোকেন চাইলে তিনি বলেন, ব্যাংকে ভিড় নেই, সে কারণে টোকেনের প্রয়োজন নেই। আপনি একটু বসুন। এর বেশ কিছুক্ষণ পর সাজিবার রহমান টাকার জন্য তাগাদা দিলে শাহিদুর রহমান বলেন কালেকশন থেকে এখনো চেক তার কাছে ফেরত আসেনি। ওই সময় সাজিবার রহমান উঠে গিয়ে শাহিদুর রহমানকে তার নিজের কাছে রাখা তারে সাজিবারের চেক লটকানো অবস্থায় দেখান। এসময় ব্যাংক কর্মকর্তা শাহিদুর রহমান ভোল পাল্টে ফেলেন। তিনি বলেন, চেকের টাকা ওঠে গেছে। কেউ তুলে নিয়ে গেছে। এ সময় ব্যাংকে হই চই সৃষ্টি হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিকেল ৪টার দিকে তাকে টাকা দিবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যাংক থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে বিকেল ৪টার দিকে আবার ব্যাংকে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করে। তাদের ব্যাংকের হিসাব ঠিক আছে বলে সাজিবার টাকা তুলে নিয়ে চিট করছে এমন উল্টো অভিযোগ তোলেন। এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা কথা বলতে গেলে ব্যাংক ম্যানেজার শাহিন হাসান একই কথা বলেন। ব্যাংকে পাত্তা না পেয়ে সাজিবার রহমান সন্ধ্যার পর আত্মীয়-স্বজন নিয়ে আবার ব্যাংকে যান। তাদের চাপের মুখে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টাকা দিতে রাজি হয়। তাদেরই হিসাবে ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করে। উল্লেখ্য, রতনের হুন্ডি ব্যবসার সাথে অনেকে জড়িয়ে থাকলেও পিয়ন মামুনকে বদলি করা হয়। তাছাড়া সকলেই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। ওই ঘটনায় তেমন কারো শাস্তি না হওয়ায় চক্রটি কিছুদিন ঘাপটি মেরে থাকার পর আবারো অপকর্মে মেতে উঠেছে।