আন্দুলবাড়িয়ায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণ : অবশেষে পুলিশি পদক্ষেপ

সালিসের নামে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা ব্যর্থ : মামলা রুজু

 

জীবননগর বুরো: জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া মণ্ডলপাড়ায় ধর্ষিত স্কুলছাত্রীকে পুলিশ গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার করেছে। গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা আদালতে ধর্ষিতার জবানবন্দি শেষে বিজ্ঞ আদালত ডাক্তারি পরীক্ষার আদেশ দিয়েছেন। ধর্ষিতাকে পুলিশ হেফাজতে রেখে আজ শনিবার ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে তার পিতার জিম্মায় দেয়া হবে।

দৈনিক মাথাভাঙ্গায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে জীবননগর থানার ওসি শিকদার মশিউর রহমান গত মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীসহ তার পিতার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। সূত্র জানায়, এ সময় ধর্ষিতা তার ধর্ষণের বিবরণ তুলে ধরে টাকা নয়, বিয়ের দাবি জানায়। প্রতারক বিয়ে না করলে সে আত্মহত্যার করার হুমকি দেয়। পুলিশ গত বুধবার থানায় ধর্ষণ মামলা রুজু করে অভিযুক্ত ধর্ষককে গ্রেফতারের চেষ্টা চালায়। এদিকে আলোচিত রাজিব হাসানকে রক্ষা করতে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলে রশি টানাটানি শুরু হয়েছে। একপক্ষ গত মঙ্গলবার রাতে ধর্ষক ও ধর্ষিতাকে অনুপস্থিত রেখে উভয়পক্ষের অভিভাবককে নিয়ে সালিস বৈঠক করে। ২য় দফা বৈঠক শেষে অভিযুক্ত ধর্ষককে নগদ দু লাখ টাকা, পুলিশ, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী ম্যানেজ করতে আরো এক লাখ টাকা দাবি করে। বৈঠকটি রাত ৩টার দিকে শেষ করা হয়। সকালে বৈঠকের খবর ফাঁস হয়ে গেলে ক্ষমতাসীন দলের অপর একটি অংশ বিরাগভাজন হয়ে ওঠে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সালিসে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দ ব্যাপক আলোচিত হয়ে তোপের মুখে পড়েন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্ত করেন পুলিশ, সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংস্থা। নানা সমালোচনার মুখে তাদের দাবি কার্যকর করতে ব্যর্থ হলে গত বৃহস্পতিবার রাতে ক্ষমতাসীন দলের অপরপক্ষটি ধর্ষক ও ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীকে অনুপস্থিত রেখে উভয়পক্ষের অভিভাবকদের নিয়ে ৩য় দফা সালিস বৈঠকে বসেন। সালিস বৈঠক শেষে ধর্ষককে এক লাখ টাকা জরিমানা ও পুলিশ, সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংস্থাকে ম্যানেজ করতে অতিরিক্ত আরও ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়।

সালিস শেষে উভয়পক্ষ দাবি মেনে নিয়ে সহি স্বাক্ষরের পর টাকা পয়সা লেন-দেন শেষ হয়। থানায় মামলা দায়ের ও গভীর রাতে পুলিশ ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে থানায় নেয়ায় বেরসিক জনতা মন্তব্য করতে গিয়ে বলছেন, এখন আম গেল, ছালাও গেলো।

উল্লেখ্য, গত ১১ জানুয়ারি রাতে মণ্ডলপাড়ার আহাদ আলী ওরফে খোকনের ছেলে কলেজছাত্র রাজিব হাসান (২৫) সকালে বিয়ের কথা বলে রাতে প্রতিবেশী এক প্রেমিকাকে ধর্ষণ করে সটকে পড়ে।