আজ ২২শে শ্রাবণ

স্টাফ রিপোর্টার: ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে, আমি বাইবো না মোর খেয়া তরী এইঘাটে গো’-আজ বাইশে শ্রাবণ।’কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৩তম মহাপ্রয়াণদিবস। বাঙালির প্রাণের এ কবি নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেও অসামান্য রচনা আরকাজের মধ্যে তিনি আজো বেঁচে আছেন প্রেরণাদাতা হয়ে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরবহুমুখি সৃজনশীলতা বাংলা সাহিত্য ও শিল্পের প্রায় সবকটি শাখাকে স্পর্শকরেছে, সমৃদ্ধ করেছে। তার লেখা গান বাঙালির হূদয়ে প্রতিধ্বনিত হয় আজো।আনন্দে, বেদনায় এমনকি দ্রোহে এখনো রবীন্দ্রনাথ বাঙালির প্রেরণার উত্স।রবীন্দ্রনাথ আমাদের মন-মানসিকতা গঠনের, চেতনার উন্মেষের প্রধান অবলম্বন।তিনি গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় নন্দিত। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ওবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বাংলা সাহিত্য ও সঙ্গীতে রবীন্দ্রনাথ যুগান্তকারীপরিবর্তনের সূচনা করেন।রবীন্দ্রনাথের লেখা বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারেসম্মানের আসনে পৌঁছে দিয়েছে।

রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয়েছিলো কোলকাতারএক পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে (৭ মে, ১৮৬১-৭ আগস্ট, ১৯৪১) (২৫বৈশাখ, ১২৬৮-২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলার দিকপাল কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, গল্পকার, প্রাবন্ধিক ওদার্শনিক। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি প্রথম কবিতা লেখেন। ১৮৮৭ সালে মাত্র ষোলবছর বয়সে ভানুসিংহছদ্মনামে তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়।গীতাঞ্জলিকাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে প্রথম বাঙালি এবং এশীয় হিসাবেসাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। নোবেল ফাউন্ডেশন তার এইকাব্যগ্রন্থটিকে বর্ণনা করেছিল একটি গভীরভাবে সংবেদনশীল, উজ্জ্বল ও সুন্দরকাব্যগ্রন্থহিসেবে। তার লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায়ভালোবাসি…’গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। ‘জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে’ভারতের জাতীয় সঙ্গীতও তারই লেখা।

বঙ্গীয় শিল্পের আধুনিকীকরণে তিনিধ্রুপদি ভারতীয় রূপকল্পের দুরূহতা ও কঠোরতাকে বর্জন করেন। নানান রাজনৈতিক ওব্যক্তিগত বিষয়কে উপজীব্য করে রচিত হয়েছে তার উপন্যাস, ছোটগল্প, সঙ্গীত, নৃত্যনাট্য, পত্রসাহিত্য ও প্রবন্ধসমূহ। তার হাতেই বাংলা ভাষায় প্রথমসার্থক ছোটগল্পের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলা উপন্যাসকে তিনি আধুনিক ও সার্থকউপন্যাসে তুলে এনেছেন। তার লেখা ঘরে বাইরে, গোরা প্রভৃতি উপন্যাস; রক্তকরবী, অচলায়তন, বিসর্জন প্রভৃতি নাটক যেকোনো সময়ের মানুষের কাছেসাম্প্রতিক ঘটনা হয়ে উপস্থাপিত হয়। শুধু সৃজনশীল সাহিত্য রচনায় নয়, অর্থনীতি, সমাজ, রাষ্ট্র নিয়ে তার ভাবনা তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।কবিগুরুরপ্রয়াণ দিবস উপলক্ষে সারাদেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন নানাঅনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমী দিবসটি স্মরণে বক্তৃতা ওসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ছায়ানট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণদিবসের অনুষ্ঠান করবে ৮ আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায়।